দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর উপায় ডায়াবেটিস কি ডায়াবেটিস কেন হয় ডায়াবেটিসের লক্ষণ ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ, কিভাবে বুঝবেন আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে এবং দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর উপায় সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব।
দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
ডায়াবেটিস রোগী প্রত্যেকটি পরিবারেই কম বেশি রয়েছে বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিসটি আমাদের জন্য অনেক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে রক্ত মানুষের হয় কিন্তু ডায়াবেটিস অনেকের ক্ষেত্রে ভয়াবহ রোগ অনেকেই জানতে চান দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর উপায় কি আজকের পোস্টে আমরা দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।
ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে আরো পড়ুন
ডায়াবেটিস কি?
ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যাকে ডাইবেটিস মেলিটাস বলে ডায়াবেটিস এর কারণে মূলত আমাদের রক্তে গ্লুকোজ বা সুগারের পরিমাণ অতিরক্ত মাত্রায় বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিস হওয়ায় আপনার শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা কার্যকর ভাবে ব্যবহার করতে পারে না ।
স্টক, ডিসিজ,কিডনি, ইত্যাদি বিভিন্ন রোগের জন্য এই ডায়াবেটিস মেরিটাই এ কারণেই ডায়াবেটিস কমানোর উপায় আমাদের জানা উচিত।
ডায়াবেটিস কেন হয়?
আমরা যে খাদ্য গ্রহণ করি তা মূলত কার্বোহাইডেট বা শর্করা আর এই সরকারাই হচ্ছে গ্লুকোজ এর উৎস রক্ত প্রবেশের পরেই শুরু হয় ইনসুলিন এর কাজ।
More: মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায়
ইনসুলিন এক ধরনের হরমোন বা গ্লুকোজকে মানুষের দেহে কোষগুলোতে পৌঁছে দেয় সেই গ্লুকোজ থেকেই শক্তি উৎপাদন হয় এখন যদি কোন কারণে স্বাভাবিক কর্মদক্ষতা হারিয়ে ফেলে তাহলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিসের লক্ষণ
- ঘন ঘন ক্ষুধা লাগা
- পিপাসা বৃদ্ধি পাওয়া
- ওজন কমে যাওয়া
- বারবার প্রসাব করা
চোখের ঝাপসা দেখা অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যাওয়া মিষ্টি খাবারে প্রতি আসক্তি সৃষ্টি হওয়া বমি মুভি ভাব ও মাঝেমধ্যে মাথা ব্যথা করা মুখ শুকিয়ে যাওয়া।
ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ
ডায়াবেটিস মূলত তিন প্রকারের হয়ে থাকে নামগুলো এবং লক্ষণ সমূহ নিচে আলোচনা করা হলো।
টাইপ ১ ডায়াবেটিস
টাইপ ১ ডায়াবেটিসের লক্ষণ: শরীরে যখন কোন ইনসুলিন তৈরি হয় না সেটাই টাইপ এন্ড ডায়াবেটিস।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস
টাইপ ২ ডায়াবেটিস এর লক্ষণ: শরীরে যখন ইনসুলিন তৈরি হয় না বা হলেও তা সঠিকভাবে কাজ করে না সেটাই টাইপ ২ ডায়াবেটিস।
প্রি ডায়াবেটিস
প্রি ডায়াবেটিসের লক্ষণ: যখন সুগার লেভেল স্বাভাবিক লেভেল থাকে একটু বেশি থাকে সেটাই প্রি ডায়াবেটিস।
ডায়াবেটিসের স্বাভাবিক মাত্রা
আপনার উপরোক্ত লক্ষণ গুলো থাকলে রক্তের সুগার লেভেল টেস্ট করাতে পারেন সুগার লেভেলের মাত্রা স্বাভাবিক মাত্রা থেকে বেশি হলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ডায়াবেটিস রয়েছে।
ডায়াবেটিস মাত্রা
আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে সুগার লেভেল কত হলে বুঝবেন আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।
ডায়াবেটিসের মাত্রাটাকে মেডিকেলের ভাষায় ৪ ভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া যায় মেডিকেলের তথ্য অনুযায়ী আমরা আপনাদেরকে নিম্নতা বর্ণনা করে দিচ্ছি।
১. সাধারণত রেনডম ব্লাড সুগার ১১মি. মো./লি. এর বেশি হলে ধরে নিতে পারেন আপনার শরীরে ডায়াবেটিস আছে।
২. ফাস্টিং ব্লাড সুগার ৭ এর মি. মো./লি. এর বেশি হলে ধরে নিতে পারেন আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রয়েছেন ডায়াবেটিস চিকিৎসা মেনে আপনার দ্রুত চিকিৎসা করানো উচিত।
৩. তাছাড়া সকালে খালি পেটে মাপলে 5.6 মি. মো./লি. এর কম হয় তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার ডায়াবেটিস নেই এটি একজন সুস্থ রোগীর আলামত।
৪. আর যদি ৫.৬ থেকে ৬.৯ মি. মো./লি. এর মধ্যে হয় তাহলে ধরে নিবেন আপনার প্রি ডায়াবেটিস। এক্ষেত্রে আপনার জন্য সতর্কতা জরুরি।
দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর উপায় সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনার মূল সাবজেক্ট নির্ধারণ করেছিলাম তাহলে চলুন জেনে নেই দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর কার্যকরী উপায় সম্পর্কে।
দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর উপায় – ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা একেবারে নিরাময় করতে পারা যায় না কিন্তু আপনি ডায়াবেটিস কমিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন কিছু পরীক্ষিত উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব যার মাধ্যমে আপনি দ্রুত ডায়াবেটিস কমাতে পারবেন।
১. নিয়মিত ব্যায়াম করা
আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন একটি মাঝারি ওজন পেতে এবং সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
দ্রুত হাঁটাচলা ও ভারী জিনিসপত্র উত্তোলন দৌড়ানো হাইকিং বাইক চালানো এবং সাঁতার কাটা ইত্যাদি ব্যায়ামগুলো করতে পারেন।
সেরা ব্যাঙগুলোর মধ্যে একটি সহজ ব্যায়াম হচ্ছে হাঁটাহাঁটি করা প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০ মিনিট হাঁটবেন এটি ইনসুলিন মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
নিয়মিত ব্যায়াম ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে তাছাড়া প্রিডাইবেটিস থেকে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়া থেকেও রোধ করতে সাহায্য করে।
২. চিনি বা শর্করা জাতীয় খাবার ত্যাগ
অবশ্যই আপনাকে এটা মাথায় রাখতে হবে চিনিযুক্ত এবং কার্বোহাইড্রেট খাবার খেলে ডায়াবেটিস ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ডায়াবেটিস হয়ে যেতে পারে বেশি থাকে তাই চিনি ও শর্করা জাতীয় খাবার বেশি খেলে রক্তে সরকার আর মাত্রা অতিরিক্ত হারে বেড়ে যেতে পারে।
৩৭ টি গবেষণায় দেখা গেছে যে দ্রুততম সর্বোচ্চ কার্বোহাইড্রেট গ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা ৪০% বেশি।
তাই ডায়াবেটিস ঝুঁকি কমাতে এসব খাবার এড়ানো অবশ্যই উচিত।
৩. পানি পান করা
পানি তো আমরা সবাই পান করি নিয়মিত পানি পান রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক সীমার মধ্যে রাখতে সাহায্য করে ডি হাইড্রেশন প্রতিরোধের পাশাপাশি,
এটি প্রসবের মাধ্যমে অতিরিক্ত চিনি বের করিয়ে আপনার কিডনিকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা বেশি পানি পান করে তাদের রক্তের সুগার লেভেল ভাড়ার ঝুকি কম।
তাই নিয়মিত পানি পান করলে রক্তকে রি হাইড্রেট করতে সাহায্য করে রক্তে শর্করার মাত্রা কমা এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
আর চিনি যুক্ত পানীয় রক্তে গ্লুকোজ বাড়ায় ওজন বাড়ায় এবং সেইসাথে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বাড়ায়
৪. ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া
ফাইবার যুক্ত খাবার রক্তে সুগার সো নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিসের আশঙ্কা এবং হার্টের রোগ আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করে।
দুই ধরনের ফাইবার রয়েছে যেমন:
১. খাবেন না: বাদাম, টমেটো, গাজর ইত্যাদি।
২. খাবেন: ওটস, বার্লিং, আপেল ,ডাল ইত্যাদি।
যদিও উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু দ্রব্য নিয়েও ফাইবার স্পষ্টভাবে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে বেশি ভূমিকা পালন করে।
যে সব খাবারের ফাইবার বেশি থাকে তার মধ্যে রয়েছে: মিষ্টি আলুর শাক, কলমি শাক, পুদিনা পাতা, পুঁইশাক, মুলা,ঢেঁড়স,ডাটা ,বাঁধাকপি ফুলকপি, ওলকপি ,গাজর, ফল , ইত্যাদি।
৫. গ্লাইসেমিক খাবার পরিহার
গ্লাইসেমিক সূচক আমরা কিভাবে খাবার শোষণ করি বা হজম করিতা পরিমাপ করে রক্তে সরকারের মাত্রা বৃদ্ধি হারকে প্রভাবিত করে।
কম গ্লাইসেমিক খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের সুগার লেভেল কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।
যদিও খাবারের গ্লাইসেমিক শোষণ গুরুত্বপূর্ণ তবে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণও গুরুত্বপূর্ণ।
কম থেকে মাঝারি গ্লাইসেমিক সূচক যুক্ত খাবারের তালিকা:
- বার্লি
- ইয়োগার্ট
- ওটোস
- মটরশুটি
- মসুর ডাল
- গমের পাস্তা ইত্যাদি।
কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত খাবার বাছাই করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য জরুরী।
৬. স্ট্রেস লেভেল ম্যানেজ করা
স্টেস বা মানসিক চাপ রক্তে সুগার লেভেল কে প্রভাবিত করে।
গলুকাগন এবং করটিসলের মত এক ধরনের হরমোন স্টেসর সময় নিঃসৃত হয় এই হরমোন গুলির রক্তে সুগার লেভের বাড়িয়ে দেয়।
ব্যায়াম এবং মেডিটেশন স্টেস করে এবং রক্তে সুগার লেভেল কমায়।
ব্যায়াম বা রিলাক্সেশন মানসিক চাপ কমায় ফলের রক্তে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
৭. পরিমাপ মতো ঘুম
পরিমাপ মতো ঘুমান, পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের অভাবে রক্তের সুগার লেভেল এবং ইনসুলিন মাত্রা কেও প্রভাবিত করে যা ক্ষুধা এবং ওজন বৃদ্ধি করতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে গ্রোথ হরমোন কমায় এবং করটিসলের মাত্রা বাড়ায় এর দুটোই রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পর্যাপ্ত ঘুম আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে এভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
৮. আপেল সিডার ভিনেগার
আপেল সিডার ভিনেগারের অনেক উপকারিতা রয়েছে এটি রক্তের সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে।
গবেষণা দেখা গেছে যে ভিনেগার আপনার শরীরের শর্করার আর মাত্রা কে প্রভাবিত করে।
এটি পানিতে মিশ্রিত করে উচ্চ কার্বোহাইডরেট খাবার খাওয়ার আগে পান করতে পারেন।
৯. দারুচিনি
দারুচিনি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং ডায়াবেটিস ও নিয়ন্ত্রণ করে এতে রক্তের সুগার লেভেল কে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
গবেষণা দেখা গেছে দারুচিনি রক্তে সুগারের মাত্রা ২৯% পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে।
আপনি এক কাপ গরম পানিতে ১/২ থেকে ১ চামচ দারুচিনি মিশিয়ে প্রতিদিন পান করতে পারেন আপনি চা মসৃণ এবং মিষ্টান্ন গলিতে দারুচিনি মিশিয়ে খেতে পারেন।
১০. মেথি বীজ
মেথি বিচ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কারণ ফাইবার যুক্ত থাকায় এটি রক্তের সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে।
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে মেথি ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের সুগার লেভেলকে কার্যকর ভাবে কমিয়ে দিতে পারে।
ডায়াবেটিস কমানোর জন্য দুই চামচ মেথি বীজ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং প্রতিদিন সকালে খালি পেটে সেই পানি পান করুন এছাড়া গরম বা ঠাণ্ডা পানি বা দুধের সাথে ও মেথি এর গুড়া খেতে পারেন।
১১. ওজন ঠিক রাখা
একটি পরিমাণ ওজন বজায় রাখা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে এমনকি শরীরের ওজন ৭ পার্সেন্ট কমিয়ে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি 58 শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে এটি একটি সাধারণ ডায়াবেটিস ঔষধ এর চেয়েও ভালো কাজ করে বলে মনে হয়।
এক গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রিডায়াবেটিস সহ এক হাজারেরও বেশি মানুষের প্রতি কেজি 2.2 শতাংশ ওজন বাড়ানোর জন্য ডায়াবেটিসের ঝুঁকি 16 শতাংশ কমেছে সর্বোচ্চ 96 শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।
অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিস বাড়ানোর সম্ভাবনা বাড়ায় আর যদি ওজন কমিয়ে নিয়ন্ত্রণে এনে ফেলেন তাহলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় খুবই সহজ।
দেহের ওজন স্বাস্থ্যকর মাত্রায় নিয়ন্ত্রিত রাখার মধ্য দিয়ে ডায়াবেটিসসহ আরো বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
১২. ডায়েটে কম কার্বোহাইড্রেট খাবার
ডায়েটে খুব কম কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার রাখা আপনাকে ডায়াবেটিস দাঁড়াতে সাহায্য করতে পারে।
ফলে ধারাবাহিকভাবে রক্তের শর্করার মাত্রা কমিয়ে এবং অন্যান্য ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এর কারণগুলি হ্রাস করতে সাহায্য করে।
12 সপ্তাহের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে প্রিডায়াবেটিস ব্যক্তিরা কম চর্বিযুক্ত খাবার খায় ফলে লো কার্ব গ্রুপের রক্ত শর্করার পরিমাণ 12 পার্সেন্ট এর এবং ইনসুলিন 50 পার্সেন হ্রাস পেয়েছে এদিকে কম চর্বি গ্রুপের রক্তে শর্করার পরিমাণ মাত্র 1% এর ইনসুলিন 19 শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
আপনি যদি সর্কারা খাওয়া কমিয়ে দেন তাহলে খাওয়ার পর আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বাড়বে না অতএব আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে আপনার কম ইনসুলিন এর প্রয়োজন হবে তাই কিটোজেনিক বা খুব কম কার্ব ডায়েট অনুসরণ করলে রক্তে শর্করার এবং ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে যা ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
১৩. অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা জেল এর রয়েছে একটি শক্তিশালী উপাদান যার নাম ফাইলস এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে ।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে হাই টাইপ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য উপকারী দিনে দুইবার পানির সঙ্গে হলুদ তেজপাতা ও অ্যালোভেরা মিশিয়ে পান করুন যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে।
১৪. দৈনিক সুগার লেভেল পরীক্ষা
নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজের লেভেল পরিমাপ এবং পর্যবেক্ষণ করুন যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ।
উদাহরণস্বরূপ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ খাবার বা ঔষধের এডজাস্টমেন্ট করতে পারলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে এটি নির্দিষ্ট খাবার আপনার শরীরে কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় তা জানতেও সহায়তা করবে।
১৫. ধূমপান পরিত্যাগ
ধূমপান হূদরোগ এম্ফিজেমা এবং ফুসফুস , ক্যান্সারসহ অনেকগুলো গুরুতর রোগের কারণ হতে পারে।
একটি এক মিলিয়নের বেশি লোকের গবেষণায় দেখা গেছে ঘর ধূমপানকারীদের মধ্যে 40 শতাংশ এবং যারা প্রতিদিন বৃষ্টির বেশি সিগারেট খায় তাদের মধ্যে 61 শতাংশ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রয়েছে।
১৬. ভিটামিন ডি
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে জন্য ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি পায় না এবং যাদের রক্তে ভিটামিন ডি এর মাত্রা কম তাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি অনেক স্বাস্থ্য সংস্থা ভিটামিন ডি এর মাত্রা কমপক্ষে 30 এমজি মিলি বজায় রাখার সুপারিশ দিয়েছেন একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে যাদের রক্তে ভিটামিন ডি এর মাত্রা কম তাদের চেয়ে যাদের রক্তে ভিটামিন ডি এর মাত্রা বেশি তাদের ডায়াবেটিসের 43 শতাংশ কম আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা ভিটামিন গ্রহণ করে তাদের ইনসুলিন উৎপাদন বৃদ্ধি পায় রক্তের স্বাভাবিক হয় ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
সূর্যের আলো সামুদ্রিক মাছ যেমন টুনা সার্ডিন ডিমের কুসুম মাশরুম ইত্যাদি ভিটামিন ডি এর উৎস হতে পারে এগুলো আপনার জন্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও উপকৃত হতে পারে।
১৭. প্রতিক্রিয়াজাত খাবার কম
আপনার স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে প্রতিক্রিয়া জাত খাবারের পরিমাণ কমিয়ে নিন ।
গবেষণায় দেখা গেছে যে অদ্রিস তেল পরিশোধিত শস্য ইত্যাদি খাওয়া কমালে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমতে সাহায্য করে।
প্রতিক্রিয়াজাত খাবার তালিকা: যেমন প্রাইস পিজ্জা বার্গার ইত্যাদি: খাওয়ার ফলেই উচ্চ কোলেস্টেরল হজমে সমস্যা এবং হৃদরোগের মতো বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে এইসব খাবারের দেহের ইনসুলিনের মাত্রা কে ভারসাম্যহীন করে ফেলে যা থেকে ডায়াবেটিস রোগ দেখা দিতে পারে।
১৮. কফি/চা খাওয়া
গবেষণায় দেখা গেছে যে কফি বা চা ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করে ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে।
অন্য গবেষণা দেখা গেছে যে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রতিদিন কফি পানে ৮ থেকে ৫৪ শতাংশ কমে যেতে পারে।
কফি এবং চা এতে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা পলিফেনাল নামে পরিচিত এবং যা ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করতে পারে।
কফি বা চা রক্তের শর্করার লেভেল কমাতে সাহায্য করে যা ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।
ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
১৯. প্রাকৃতিক ঔষধ
কিছু ভেষজ আছে যা ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বাড়াতে এবং ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
কারকিউমিন
কার কি আমীন হল মসলা হলুদের একটি উপাদান যা তরকারির অন্যতম প্রধান উপাদান।
গবেষণায় দেখা গেছে যে আর্থই টিসের বিরুদ্ধে এবং পিডি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি কার্যকরী হতে পারে।
এটি ডায়বেটিসের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে।
২৪০ ফ্রি ডায়াবেটিক প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নয় মাসের গবেষণা দেখা গেছে যে যারা প্রতিদিন ৭৫০ মিলিগ্রাম কারকিউমিন গ্রহণ করে তাদের মধ্যে কারো ডায়াবেটিস হয়নি।
এছাড়াও কারকিউমিন গ্রুপ সুগার লেভেল কে নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস কমাতে সহায়তা করে।
বারবেরিন
বারবেরিন বিভিন্ন ঔষধিতে পাওয়া যায় গবেষণা দেখা গেছে যে এটি কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য হৃদরোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যায়।
এছাড়াও টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে বারবেরিন রক্তে শর্করার মাত্র কমাতে সাহায্য করে।
যেহেতু বারবেরিন ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বাড়ি এবং সরকারের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে তো এটি পিরিডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।
রক্তে শর্করার উপর এর প্রভাব এত প্রবল তা এটি ডাক্তার দ্বারা অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত অন্যান্য ডায়াবেটিস ঔষধের সাথে ব্যবহার করা উচিত নয়।
২০. ঘরোয়া উপায়
কিছু প্রাকৃতিক ঘরোয়া উপায়ে রয়েছে যেগুলো দ্বারা আপনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
করলা
করলা ইনসুলিন পলিপিপেট টাইপ পি সমৃদ্ধ যা হাইপার গিলাই সেম ইয়ার মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ক্যারোটিন এবং মম মোমোডিসির নামক দুটি উৎপাদন করলাতে থাকে যা রক্তের সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে
সপ্তাহে একবার ডায়বেটিস কমাতে করলা তরকারি খান এ ছাড়া আপনি করলার টুকরো গুলি কেটে রস তৈরি করুন।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই রস পান করুন যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।
নিম
নিম্বিটা ইনসুলিন সংবেদনা শাখা বৃদ্ধি করে যা রক্তের সরকারের মাত্রা হ্রাস করে এবং হাই ও গেলাইমা ড্রাগের উপর নির্ভরতা কমায়।
নিম ডায়াবেটিস নিরাময়ের ভূমিকা পালন করে।
আমের পাতা
আমের কথা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসার জন্য কার্যকরী ঘরোয়া উপায় আমের কথা ডায়াবেটিসের প্রাথমিক চিকিৎসায় ব্যবহার করতে পারেন কারণ এতে ভিটামিন সি এবং টেনিন থাকে।
আমের কথাগুলির ধুয়ে শুকিয়ে গুরু করে প্রতিদিন সকালে ও রাতে এই গ্রুপ পানি পান করুন কিছু তাজা আমের পাতা সিদ্ধ করে এক গ্লাস পানিতে সারারাত ঠান্ডা করে রাখার জন্য রেখে দিন তারপর সকালে উঠে খালি পেটে পান করুন।
তাছাড়া আমলকি তুলসী পাতা সজনে পাতা ইত্যাদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর উপায় সম্পর্কে আলোচনা শেষে আমরা চলে যেতে চাই আপনাদের বিভিন্ন প্রশ্ন উত্তরে যেগুলো আপনার প্রায়ই যেন প্রয়োজন তা নিম্নে তুলে ধরা হলো।
ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির উপায়
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অন্য যেকোনো পদ্ধতি ব্যর্থ হলেও খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা পরিবর্তন সফল হতে পারে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কয়েক বছর আগে প্রকাশিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম ফলে দেখা যায়, কোনো ধরনের ওষুধ গ্রহণ ছাড়াই নিবিড়ভাবে ওজন হ্রাসের মাধ্যমে টাইপ টু ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
খালি পেটে ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
সকালে খালি পেটে লেবুপানি খাওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের। হালকা গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে। সেই পানি সকাল সকাল খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। প্রতিদিনের খাবারে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন।
তাড়াতাড়ি ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
করলার রসের সঙ্গে জল মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খান। যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য দারচিনি খুবই উপকারী। এটি অগ্নাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে উদ্দীপ্ত করে এবং রক্তের সুগার লেভেল কমায়। দারচিনির গুঁড়ো চা, জল বা অন্য পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়ে পান করতে পারেন
ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
ওষুধ ও ইনসুলিন ছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে। শুধুমাত্র সুনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন, ব্যায়াম, সঠিক খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমেই তা সম্ভব। আকুপ্রেসার, মেডিটেশন, যোগ-ব্যায়াম, প্রাণায়াম- এসবই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।