শবে বরাতের ফজিলত ও আমল - এবং করণীয় ও বর্জনীয় কর্মসমূহ
#শবে বরাত রিমাইন্ডার!
#শবে বরাতের ফজিলত ও আমল
এবং করণীয় ও বর্জনীয় কর্মসমূহঃ
#প্রথম বিষয় হলোঃ
শবে বারআত বা লাইলাতুন নিসফি মিন শা’বানের রাত্রিতে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের গুনাহ মাফ করেন, এটা সহীহ হাদীস।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দিকপাত করেন এবং মুশরিক এবং বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করেন।”
[সুনানে ইবনে মাজাহঃ ১৩৯০]
তার মানে এই রাত্রিতে আল্লাহ দুই শ্রেণীর মানুষ বাদে বাকিদেরকে ক্ষমা করেন।
দুই শ্রেণী হলোঃ
ক. মুশরিক।
খ. ( হিংসুক ) বিদ্বেষ পোষণকারী।
তার মানে হলো শবে বারআত হলো কমন বোনাস। এই রাত্রিতে আপনি যদি ঘুমিয়ে থাকেন, জেগে থাকেন, কিন্তু আপনার কোনো শিরক নেই, মনে কোনো বিদ্বেষ নেই তাহলে আল্লাহ আপনাকে মাফ করে দিবেন (ইন শা আল্লাহ)। আপনার আমলনামায় বোনাসটি জমা হয়ে যাবে।
#দ্বিতীয় বিষয়টি হলোঃ
এই রাতে আমরা আমল করবো কি-না?
আমল না করে ঘুমিয়ে থাকলেও আপনি বোনাস পাবেন। এই রাতে আমল করার ব্যাপারে কোনো সহীহ হাদীস পাওয়া যায় না,
তবে কিছু যঈফ হাদীস পাওয়া যায়। যঈফ হাদীসের আলোকে তিনটি আমল পাওয়া যায়।
ক. কবর যিয়ারত। [সুনানে ইবনে মাজাহঃ ১৩৮৯]
খ. দু’আ করা। [আল-জামে আস-সাগীরঃ ৩৯৫২]
গ. নামাজ পড়া। [সুনানে ইবনে মাজাহঃ ১৩৮৮]
তবে সবগুলো হাদীসই যঈফ। কিন্তু, যেহেতু এই রাতের ফযিলত সহীহ, সেহেতু কেউ যদি অন্যান্য রাতে তাহাজুদ পড়ে, এই রাতেও পড়ে, অন্যান্য রাতে দু’আ করে, এই রাতেও করে, তাহলে এটাকে কিছু কিছু ইমাম মুস্তাহাব বা বৈধ বলেছেন।
যেমনঃ ইমাম আল-আউযায়ী, ইমাম আশ-শাফে’ঈ।
আমরাও মনে করি, যদি কেউ এই রাতে ব্যক্তিগতভাবে (আবারো বলছি, ব্যক্তিগতভাবে) তাহাজ্জুদ পড়ে, আল্লাহর কাছে দু’আ করে, তবে সেটা নাজায়েজ হবে না, বিদ’আতও হবে না।
কয়েকটি কারণে এগুলো নাজায়েজ বা বিদ’আত হবে নাঃ
√ সুন্নাত দ্বারা ফযিলত প্রমাণিত, এখানে যঈফ হাদীস দ্বারা আমল করলে বিদ’আত হবে না।
√ তাবে’ঈদের মধ্য থেকে কোনো কোনো তাবে’ঈ এই রাতে ইবাদাত করেছেন। যেমনঃ আবু আব্দুল্লাহ মাকহুল, খালিদ বিন মা’দান, আবু আব্দুল্লাহ হিমসী, লুকমান ইবনু আমির (আল্লাহ সবার উপর রহম করুন)।
√ এই রাত্রিতে সমবেত হয়ে ইবাদাত করাকে সবাই বিদ’আত বলেছেন, মাকরূহ বলেছেন, এটা নিয়ে কোনো মতভেদ নাই। যেমনঃ প্রসিদ্ধ হানাফী ফকীহ আল্লামা হাসান ইবনু আম্মার শুরুম্বুলালী (রাহি)।
#তৃতীয় বিষয়টি হলোঃ
এই রাত্রিতে ভাগ্য লিখা হয় এই মর্মে যা আছে সবই জাল হাদীস। এমনকি শবে বারআতের পরদিন রোজা রাখার ফজিলতের ব্যাপারে যে দুটো হাদীস আছে সেগুলোও জাল হাদীস পর্যায়ের।
তবে আমরা হাদীসে পাই, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রাখতেন।
[সহীহ বুখারীঃ ১৯৬৯]।
তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি মাসে তিন দিন রোজা ( আইয়ামে বিয) রাখতেন।
দিনগুলো হলো- তেরো, চৌদ্দ, পনেরো তারিখ (হিজরী)
[জামে আত-তিরমিজিঃ ৭৬১]।
তাহলে আপনারা যদি রোজা রাখতে চান, তাহলে এই তিন দিন অর্থাৎ তেরো, চৌদ্দ, পনেরো তারিখ রাখবেন
(যারমধ্যে আপনার শবে বারআতও পড়ে যায়)।
★★★এই রাতে বর্জনীয় কর্মসমূহঃ
- আলাদাভাবে রুটি খাওয়া
- উৎসব করা
- বাতি জ্বালানো
- মসজিদে সমবেত হয়ে ইবাদাত করা।
এগুলো হলো বিদ’আত। ফিকহের সবগুলো কিতাবে এগুলোকে বিদ’আত, মাকরূহে তাহরীমি লিখা হয়েছে।
আমরা শেষ কথায় পৌঁছতে পারি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবু বকর, উমর, উসমান, আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) কেউই এই রাত উপলক্ষ্যে মসজিদে সমবেত হয়ে আলাদা ইবাদাত করেননি।
এই রাতে দু’আ করলে দু’আ কবুল হবে এমন হাদীস আমরা শুনি। কিন্তু এটা যঈফ [জামে আত-তিরমিজিঃ ১৩৮৮]।
তবে সহীহ বুখারীর আরেকটি হাদীসে আমরা পাই, “প্রতি রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকী থাকতে (তাহাজ্জুতের নামায) আল্লাহ আকাশে এসে ঘোষণা দেন- যে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেবো, যে আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দেবো, যে আমার কাছে মাফ চাইবে, আমি তাকে মাফ করবো।”
[সহীহ বুখারীঃ ১১৪৫]
এই সুযোগ প্রতি রাতে। আমরা যদি প্রতি রাতে দু’আ করি, তাহলে প্রতি রাতই আমাদের জন্য ‘শবে বরাত’ হয়ে যায়। মুসলিমের জন্য প্রতি রাতই তো দু’আ কবুলের রাত। তারমানে দু’আ কবুলের রাত শুধু শবে বরাতই না।
#শবে বরাতঃ আমল ও ফজিলত
#ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ।
ট্যাগঃ
শবে বরাতের আমল,শবে বরাতের আমল ও ফজিলত,শবে বরাতের ফজিলত,শবে বরাতের নামাজ,শবে বরাতের রোজা,শবে বরাত,শবে বরাতের নামাজ ও রোজা,শবে বরাতের রোজার ফজিলত,শবে বরাতের ফজিলত ও আমল,শবে বরাতের নামাজের নিয়ম,শবে বরাতের ওয়াজ,শবে বরাতের রাতের আমল,শবে বরাতের রাতের ফজিলত ও আমল,শবে বরাতের রোজা কবে,শবে বরাতের রোজা কয়টি,শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত,শবে বরাত রাতের ফজিলত ও আমল,শবে বরাত কবে,শবে বরাতের নামাজ কবে,শবে বরাতের নামাজ কয় রাকাত,শবে বরাতের ফজিলত ও গুরুত্ব