যিলহজ্ব মাসের বিশেষ কিছু আমলের ফজিলত এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু 16 টি প্রশ্নের উত্তর
যিলহজ্ব মাসের বিশেষ কিছু আমলের ফজিলত এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু16 টি প্রশ্নের উত্তর
1 যিলহজ্ব_মাস_কবে_থেকে_শুরু_হবে?
2 যিলহজ্ব মাসের রোযা কবে থেকে রাখতে হবে?
3 সর্বমোট কয়টি রোজা রাখতে হবে?
4 আরাফার রোযা কবে রাখতে হবে?
5 সাহরী না খেয়ে রোযা রাখা যাবে?
6 যিনি কুরবানী করবেন না তিনিও কি রোযাগুলো রাখতে পারবেন?
7 তাকবীরে_তাশরীক_কি?
8 তাকবীরে তাশরিক কখন পাঠ করতে হবে?
9 কোন ওয়াক্ত থেকে কোন ওয়াক্ত পর্যন্ত তাকবীরটি পাঠ করতে হবে?
10 ঈদের দিন হাঁস মুরগি জবাই করা যাবে?
11 কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়াযাবে?
12 সাহরি ও ইফতারের সময়সূচী কোথায় পাবো?
13যারা প্রবাসে থাকেন তারা কবে থেকে রোযাগুলো রাখবেন?
14 রোযা রাখার জন্য নিয়ত কিভাবে করতে হবে?
15 ঈদের আগের দিন রোযা রাখা হারাম?
16 যারা কুরবানী করবেন তারা চুল নখ ইত্যাদি কবে কাটবেন?
⭕ যিলহজ্ব মাস কবে থেকে শুরু হবে?
🔸 ৩০ শে জুন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার যিলক্বদ মাসের ২৯ তারিখ। ঐ দিন সন্ধ্যায় চাঁদ উঠলে যিলহজ্ব মাস শুরু হবে, অন্যথায় এর পরের দিন সন্ধ্যা থেকে যিলহজ্ব মাস শুরু হবে ইন শা আল্লাহ 💞✅
⭕ যিলহজ্ব মাসের রোযা কবে থেকে রাখতে হবে?
🔹 যদি ৩০ শে জুন সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা যায় তাহলে ঐ দিন রাতেই সাহরি খেয়ে ০১ জুলাই শুক্রবার থেকে রোজা রাখা শুরু করতে হবে।
🔸 আর যদি ৩০ শে জুন সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা না যায় তাহলে ১ জুলাই শুক্রবার রাতে সাহরি খেয়ে শনিবার দিন থেকে রোজা রাখা শুরু করতে হবে ইন শা আল্লাহ।
⭕ সর্বমোট কয়টি রোজা রাখতে হবে?
🔹 সর্বমোট নয়টি রোজা রাখতে হবে। সবগুলো রোজা রাখাই উত্তম। তবে সবগুলো রোজা রাখতে না পারলে সাধ্য মোতাবেক রোজাগুলো রাখার চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে অন্তত শেষের দু'টি অথবা শেষের একটি রোজা হলেও রাখা উচিত ইন শা আল্লাহ 💞✅
🌠 রাসূল সল্লল্লহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
▪صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَهُ
🔸 আরাফার দিনের রোজা সম্পর্কে আমি আল্লাহ্র কাছে আশাবাদী যে, এতে তিনি পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহসমূহ মাফ করে দিবেন। -[সহিহ মুসলিম হাদিস নং- ২৬৩৬]
🔹 যাদের রমজানের কাযা রোযা বাকি রয়েছে, তারা প্রথমে কাযা রোযাগুলো রাখবেন। এরপরে শেষের একটি অথবা দুইটি রোজা আরাফার রোজা হিসেবে রাখবেন।
⭕ আরাফার রোযা কবে রাখতে হবে?
🔸 আরাফার রোজা সম্পর্কে হাদীসে পাকে “ইয়াওমে আরাফাহ” অর্থাৎ আরাফার দিনের কথা বলা হয়েছে। আর ইয়াওমে আরাফাহ হচ্ছে যিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখ। সুতরাং আরাফার রোজাটি রাখতে হবে যিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখে।
🔹 সৌদি আরবের একদিন পরে বাংলাদেশে ঈদ হয়। তাই মুহাক্কিক আলেমগনের ফতুয়া হচ্ছে, বাংলাদেশে আরাফার রোজা রাখতে হবে যিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখে অর্থাৎ ঈদের আগের দিনে। কারন রাসূল সাঃ বলেছেন, “তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো এবং চাঁদ দেখে রোজা ভঙ্গ করে।”
⭕ রোযা রাখার জন্য নিয়ত কিভাবে করতে হবে?
🔸 সাহরী খেয়ে মনে মনে স্মরণ করতে হবে যে, আমি যিলহজ্ব মাসের (নফল) রোযা রাখলাম অথবা রাখার নিয়ত করলাম। এছাড়া আরবীতে নির্দিষ্ট কোনো নিয়ত করার প্রয়োজন নেই।
⭕ সাহরী না খেয়ে রোযা রাখা যাবে?
🔹 সাহরী খাওয়া সুন্নত এবং বিরাট ফজিলতপূর্ণ একটি সওয়াবের কাজ। তাই সাহরী খেতে না পারলেও রোজা রাখার নিয়ত করে ঘুমালে রোজা রাখা যাবে, এতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না, বরং রোজা আদায় হয়ে যাবে। তবে সাহরী না খাওয়ার কারনে সুন্নত আদায়ের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হতে হবে। তাই সাহরীতে এক ঢোক পানি হলেও পান করা উচিত।
⭕ ঈদের আগের দিন রোযা রাখা হারাম?
🔸 বছরে ৫ দিন রোযা রাখা হারাম। ১) ঈদুল ফিতরের দিন এবং ২) ঈদুল আযহার প্রথম ৪ দিন। অর্থাৎ যিলহজ্ব মাসের ১০,১১,১২,১৩ তারিখ রোজা রাখা হারাম। এছাড়া অন্য যেকোনো দিন রোজা রাখা বৈধ তথা হালাল।
⭕যিনি কুরবানী করবেন না তিনিও কি রোযাগুলো রাখতে পারবেন?
🔹 এই রোযাগুলো হচ্ছে নফল। কুরবানী করা কিংবা না করার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। তাই কুরবানী না করলেও রোযাগুলো রাখতে পারবেন ইন শা আল্লাহ।
⭕যারা কুরবানী করবেন তারা চুল নখ ইত্যাদি কবে কাটবেন?
🔸 যারা কুরবানী করবেন তাদের জন্য সুন্নত হচ্ছে, যিলহজ্ব মাস শুরু হওয়ার পর থেকে কুরবানী করার আগ পর্যন্ত চুল, নখ, অবাঞ্চিত পশম কোনো কিছু না কাটা।
🔹 আর যারা কুরবানী করবেন না তারাও যদি এই সুন্নত আমলটি পালন করে থাকেন তাহলে তারা একটি মাকবুল কুরবানী করার সওয়াব লাভ করবেন ইন শা আল্লাহ 💞✅ -[আবু দাউদ, হাদিস নং-২৭৯১]
🔸 এই আমলটি সকলের জন্য প্রযোজ্য। তাই আমলটি করতে হলে যিলহজ্ব মাস শুরু হওয়ার পূর্বেই সব কিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নিতে হবে ইন শা আল্লাহ।
⭕ তাকবীরে_তাশরীক_কি?
🔹তাকবীরে তাশরীক হলঃ-
اَللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أكْبَرُ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ،
وَاللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أَكْبَرُ ﻭ ﻟِﻠّﻪ الحَمْدُ
“আল্ল-হু আকবার আল্লহু আকবার লা~ ইলাহা ইল্লাল্ল-হু,
ওয়াল্ল-হু আকবার আল্ল-হু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ”
⭕ তাকবীরে তাশরিক কখন পাঠ করতে হবে?
🔸 প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর প্রাপ্ত বয়স্ক নারী পুরুষ সকলের উপর একবার করে তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা ওয়াজিব এবং একাধিকবার পাঠ করা মুস্তাহাব। পুরুষেরা উচ্চস্বরে এবং মহিলারা নিম্নস্বরে তাকবীরটি পাঠ করবেন।
⭕কোন ওয়াক্ত থেকে কোন ওয়াক্ত পর্যন্ত তাকবীরটি পাঠ করতে হবে?
০৯ যিলহজ্জ = (ফজর+যোহর+আছর+মাগরিব+ইশা)
১০ যিলহজ্জ = (ফজর+যোহর+আছর+মাগরিব+ইশা)
১১ যিলহজ্জ = (ফজর+যোহর+আছর+মাগরিব+ইশা)
১২ যিলহজ্জ = (ফজর+যোহর+আছর+মাগরিব+ইশা)
১৩ যিলহজ্জ = (ফজর+যোহর+আছর→২৩ ওয়াক্ত)
🔹 সর্বমোট ২৩ ওয়াক্ত ফরজ নামাযের সালাম ফিরানোর পর পুরুষেরা উচ্চস্বরে এবং মহিলারা নিম্নস্বরে তাকবীরে তাশরীক পাঠ করবেন 💞✅
⭕ ঈদের দিন হাঁস মুরগি জবাই করা যাবে?
🔸 জ্বী! দুই পা বিশিষ্ট প্রানী (হাঁস, মুরগি) জবাই করা যাবে
⭕ কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়াযাবে?
🔹 জ্বী, আকিকা দেওয়া যাবে। আকিকার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সন্তানের মঙ্গল কামনা করা। সন্তান জন্মের ৭ দিনের দিন আকিকা করা সুন্নত। যিনি কুরবানী করতে পারেন তিনি চাইলে একটু কষ্ট করে (আলাদাভাবে) আকিকাও করতে পারেন। তাই সুন্নত পদ্ধতি হলো ৭ দিনের দিন আলাদাভাবে গরু কিংবা ছাগলের মাধ্যমে আকিকা করা।
🔸 ছেলেদের জন্য দুইটি ছাগল এবং মেয়েদের জন্য একটি ছাগল। কিন্তু কেউ যদি কুরবানীর সাথেই আকিকা দিতে চান তাহলে তিনি আকিকা দিতে পারবেন, এতে কোনো সমস্যা নেই।
⭕ সাহরি ও ইফতারের সময়সূচী কোথায় পাবো?
🔹 নামাজ, রোজা, সাহরী ও ইফতারের সময়সূচী সম্পর্কে জানতে মুসলিম ডে ও মুসলিম বাংলা এপ্স দুইটি অনুসরণ করতে পারেন। এই এপ্সগুলোতে চাঁদ অনুযায়ী নিয়মিত নামাজের সময়সূচী সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হয়।
⭕যারা প্রবাসে থাকেন তারা কবে থেকে রোযাগুলো রাখবেন?
🔸 আপনারা যারা দেশের বাহিরে থাকেন, তারা সেই দেশের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে রোযাগুলো রাখবেন।
⭕আরবি মাসের তারিখের সাথে ক্যালেন্ডার কিংবা গুগলের তারিখের মিল পাওয়া না যাওয়ার কারনকি?
🔹 আরবী মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। আরবী মাস কোনোটি ২৯ শে হয়ে থাকে, আবার কোনোটি ৩০ শে হয়ে থাকে। তাই ক্যালেন্ডার কিংবা গুগলের সাথে আরবী মাসের তারিখের মিল পাওয়া যায় না। সুতরাং আরবী দিন এবং তারিখ সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেতে নির্ভরযোগ্য দুইটি এপ্স হচ্ছে “মুসলিম ডে” এবং “মুসলিম বাংলা”। প্লে-স্টোর থেকে এপ্সটি নামিয়ে নিতে পারেন ইন শা আল্লাহ 💞✅